ইলশেগুঁড়ি ই পট্রিকা ১২
ইলশেগুঁড়ি ই-পত্রিকা ১২
২২ই সেপ্টেম্বর ২০২১
সুচিপত্র
আ মা র পু জো
পুজোয় পুজাবার্ষিকী একসময় বাঙালীর সব বিনোদনের উর্দ্ধে থাকত। পাশাপাশি থাকত সিনেমা হলে সপরিবারে বাঙলা সিনেমা দেখার পার্বন। সে সময় পুজাসংখ্যা এবং বাংলা সিনেমা দুয়েরই ছিল রমরমা বাজার। আজও চোখে ভাসে সেই সময়।
কিন্তু, অতীত কখনোই যাপনকে গ্রাস করতে পারে না বড়জোর করতে পারে আচ্ছন্ন। তাই সময়ের সাথে পরিবর্তনও অবশ্যম্ভাবী। যেটা জন্মলগ্ন থেকে করে আসছে ইলশেগুঁড়ি। গতবছর লকডাউনের সময়ও ইলশেগুঁড়ি মুদ্রিত হয়েছে নতুন প্রযুক্তিতে, সঙ্গে জন্ম নিয়েছে ই-পত্রিকা।
এই পুজোয় আর এক অভিনব ভাবনা ই-পত্রিকার সাপ্তাহিক প্রকাশ। পুজোর আগে সাত সপ্তাহে সাতটি পুজোসংখ্যা ই পত্রিকা। বর্তমান সংখ্যাটি চতুর্থ। আগেই জানান হয়েছে, অন্ততঃ এই সময়টা আমরা পুজোর আবহে গুরুগম্ভীর বিষয়গুলিকে একটু ছুটি দিয়েছি, থাকছে পুজোর অনুষঙ্গে কিছু মনোরম হালকা লেখার সমাহার।
এই সংখ্যাটি কেমন লাগল জানতে আগ্রহী আমরা। সবাই ভাল থাকুন।
দেবব্রত ঘোষ মলয়
আমার চোখে দূর্গা
পুজোর পরিবর্তন
মালিনা ঘোষ
‘ওঁ সর্বমঙ্গল মঙ্গল্যে,শিবে,সর্বাথসাধিকে ।শরণ্যে, ত্র্যমবকে গৌরি,নারায়ণী,নমহস্তুতে ।।সৃষ্টিস্থিতি বিনাশানাং,শক্তিভূতে সনাতনী।’
বাঙালির সব চেয়ে বড় উৎসব দূর্গা পূজো ,বহু প্রাচীন কাল থেকে হয়ে আসছে। পুরান কালে রাজা দশরথ তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র রামচন্দ্রের জন্ম লগ্নে চৈত্রমাসে শুক্লপক্ষে দুর্গাপূজোর শুভারম্ভ করেন। পরে রাজা রামচন্দ্র শরৎকালে দেবীর অকালবোধন করেই লঙ্কা যাত্রা করেন। সেই থেকেই শরৎকালে দুর্গা পূজো আড়ম্বরের সঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। যদিও উত্তর ভারতে দুর্গা পূজো নভরাত্রি হিসাবে পূজিত হয়।
তবে পূর্ব ভারতে মহিষাসুরমর্দিনীর বহু প্রাচীন মূর্তি, স্থাপত্য ও মন্দির পাওয়া গেলেও, ঐতিহাসিকদের মতে আনুমানিক ১৫০০ সালে মালদা এবং দিনাজপুরের জমিদাররা সর্বপ্রথম দুর্গাপূজোর প্রচলন করেন বঙ্গভূমিতে।
সেই যুগে সাধারণেরা এই উৎসব থেকে বঞ্চিত থাকত নানান সামাজিক কারনে! প্রায় ১৯১০ সালে সনাতন ধর্মস্টহিনি সভার উদ্যোগে শুরু হয় প্রথম সার্বজনীন দুর্গাপূজো বাগবাজারে।আজ যা সারা বাংলা, ভারতবর্ষ তথা সমগ্র বিশ্বে ধূমধামের সঙ্গে দুর্গা পূজো উদযাপিত হচ্ছে!এই উৎসবের সঙ্গে মানুষের আবেগ, আনন্দ ও অনুভূতি ছাড়াও সামাজিক, বান্যিজিক এবং সাংস্কৃতিক দিকগুলোও জড়িয়ে থাকে। এক কথাই দুর্গা পূজো মানে সবকিছুর মিলন কেন্দ্র।
যদিও একটা সময় দুর্গাপূজো মন্দির ও বনেদী বাড়ির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। এই দেবালয়ের দূর্গা পূজোতে আলাদা করে ঠাকুরের মূর্তি পাতা হত না। চিরাচরিত বিগ্রহের পূজোর সাথে মায়ের নামে ঘট পূজো হয়ে থাকে বা থাকত। অন্যদিকে, বাড়ির পূজোতে একটা সাবেকীয়ানা লক্ষ্য করা যায়! তা সে ঠাকুরের সাজসজ্জা থেকে শুরু করে পূজোর আচার অনুষ্ঠান, পোশাক আশাক এবং আহারেও। পূজোর জন্য থাকে আলাদা দালান বা আটচালা। প্রতিমা হয় ‘একচালা ডাকের সাজে’ সজ্জিত। প্রতিমার মুখের রং হয়ে থাকে হলদেটে, পরনে টকটকে লাল পেড়ে সাদা তসরের সাড়ি এবং সাবেকি গয়নায় মোড়া। আচার অনুষ্ঠান চলে কঠোর নিয়ম অনুসারে এবং জাঁকজমক ভাবে! বাড়ির লোকজনেদের পোশাক-আশাকও হয় বেশ নজর কাড়ার মত! পুরুষেরা সাদা নয়তো গরদের ধুতি পাঞ্জাবীতে সাজে, মহিলারা শোভিত হয় লাল পাড় সাদা শাড়ী, ভারি গয়না এবং আলতা সিন্দুর শাঁখা পলাতে শোভিত হয়। আহারেও থাকে নানান বাহার, তবে সেটা একেবারেই নিরামিষ পদের ভুরিভোজ।
আগে রাজবাড়ি বা বনেদীবাড়ির পূজোতে মায়ের ভোগ-মিষ্টি বানানোর জন্য আনা হত বিভিন্ন জায়গা থেকে ঠাকুর। এমনকি ব্রিটিশরাও এই উৎসবে শামিল হত শোনা যায়। বাড়ির পূজোতে আমিষ খাবার খাওয়া প্রতিমা নিরঞ্জনের পরই হত।
আজ সময়ের সাথে সাথে এবং আর্থিক অনটনের জন্য মন্দির বা বনেদী বাড়ির পূজো খানিকটা ফিকে পড়লেও নিয়মের খুব একটা হেরফের হয়নি বলা যেতেই পারে। তবে সময়ের বদল হলেও, সার্বজনীন পূজোর মজাই আলাদা! এখানে সবাই নিজের মতো আনন্দ ও উপভোগ করি। মহালয়ার দিন থেকেই শুরু হয়ে যায় পূজোর মেজাজ মানুষের মনে।আকাশে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে পূজোর গন্ধ, রাস্তা ঘাট সেজে ওঠে আলো রোশনাইয়ে এবং চারিদিকে দেখা যায় মানুষের ঢল! সৃষ্টি হয় অভুতপূর্ব দৃশ্য!
যদিও ঊনবিংশ বা বিংশ শতাব্দীতে সার্বজনীন পূজোতে ছিল একটা ঐতিহ্যের ছোঁয়া! আর্থিকভাবে ততটা শক্তিশালীও ছিল না। কিন্তু বর্তমানে সার্বজনীন পূজোর মধ্যে থিমের প্রভাব বেশ বেড়েছে। মণ্ডপ তৈরি হয় ঐতিহাসিক স্মৃতিস্তম্ভের আদলে। সত্যি এর শিল্প নৈপুণ্য দেখার মতো! কত মানুষের প্রতিভা এই পূজোর আয়োজনের মাধ্যমে আমাদের চোখের সামনে ফুটে ওঠে। দেশ বিদেশর বহু মানুষ সামিল হয় এই উৎসবকে উপভোগ করার জন্য।
কিন্তু যন্ত্রণাদায়ক যখন উৎসবের শেষে এই সৃষ্টিগুলো সংগ্রহশালার অভাবে নষ্ট হতে হয় বলে। আবার অন্যদিকে এই পূজোকে ঘিরে যথেচ্ছ আর্থিক অপচয় হয়ে থাকে। যেখানে আমাদের দেশের কত মানুষ দুবেলা দুমুঠো ভালো করে খাবার খেতে পায় না। মনে পড়ে আমার ছোটো বেলায় পুজো কমিটির সদস্যগন নবমী ও দশমীর দিন পাত পেড়ে ভোগ খাওয়ানোর আয়োজন করত। সর্ব ধর্ম বর্ণ মিলেমিশে এক আসনে বসে খেতাম। গরিবদের বস্ত্র বিতরণ হত। উৎসব মানে তো তাই, যেখানে সবাই সামিল হবে। আজকাল শহরের দিকে ভোগ পাওয়া তো দূর সামান্য প্রসাদ পাওয়াটাও ভাগ্যের। তারা ব্যস্ত থাকে বিভিন্ন সংস্থা থেকে শিল্ড পেতে... মানুষকে পাশে পেতে নয়। গ্রামাঞ্চলে তবুও খানিকটা এই রীতিনীতিকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। আমাদের সবার এই ব্যাপারে অবশ্যয় সচেতন হওয়া উচিৎ!
আজকাল সার্বজনীন পূজার সাথে সাথে আর এক ধরনের পূজো দেখা যাচ্ছে শহরাঞ্চলে!সেটা হল আবাসনের পূজো! এই পূজোগুলো অনেকটা বাড়ির পূজো এবং সার্বজনীন পূজোর সংমিশ্রন বলা যেতে পারে। শুধু আবাসনের পরিবারই এই পূজোতে অংশগ্রহণ করতে পারে।বাড়ির পূজোর মতোই হয় আচার অনুষ্ঠান। হয় সাংস্কৃতিক ও সামাজিক অনুষ্ঠান এবং সঙ্গে থাকে ঢালাও খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন।
দূর্গা পূজোর সেকাল থেকে একালের সফরে অনেক কিছুতে আধুনিকতা,পরিবর্তন বা বিবর্তন চোখে পড়লেও, আমাদের মানুষের মনে উৎসাহ, আনন্দ, অনুভূতি, আড্ডা এবং ভুড়িভোজ, এমনকি বাঙালির প্রিয় শারদীয়া পত্রিকা পড়া কোন কিছুরই পরিবর্তন ঘটেনি। আমরা চিরাচরিত প্রথার সঙ্গে আধুনিকতাকে সুন্দরভাবে সংমিশ্রণ ঘটিয়েছি! অদূর ভবিষ্যতেও এই ধারাতেই প্রভাহিত হবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস !
বামনগাছির পুজোর দিন গুলো
ঐশ্বর্য্য কর্মকার
দুর্গা। আড়াই অক্ষরের এই শব্দটার সঙ্গে আমার পরিচয় বোধ হয় অক্ষরজ্ঞান হওয়ার আগে থেকেই।
দুর্গা পুজো মানেই বামনগাছি - এই পুজো প্রায় সাড়ে তিনশত বছরের পুরোনো । বামনগাছি আমার মাসির বাড়ি।
কথিত আছে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের আমল থেকে এই পুজোর সূচনা। একটা ঢাকি, একটা কাঁসর, আর একটা দুটো বাল্বের আলোতেই কেটে যেত সম্পূর্ণ পুজোটা। হাতে লেখা পাণ্ডুলিপির মন্ত্র আজও ব্যবহার করা হয় । বোধনে ধুতি পরে মাকে বেদিতে তোলা, পুজোর দিন গুলিতে প্রত্যেক পরিবারের একজন সদস্যের ঠাকুর দালানা বসে মায়ের ভোগ খাওয়া, প্রতিদিন স্নান করে একসাথে মায়ের সামনে দাঁড়িয়ে পুষ্পাঞ্জলি দেওয়া, মহাষ্টমীতে একশো আটটা প্রদীপের সলতে পাকিয়ে প্রদীপ জ্বালানো, দশমীতে পান্তা ভোগ, এইসব আমি প্রথম দেখি এখানে।
আজ শহরের উপচে পড়া ভিড়, ঝলমলে রোশনাই আলো, ডিজে মিউজিক - এই সবনিয়েই এখন পুজো কাটে।
কিন্তু মন আজ চায় সেই ঢাকের আওয়াজ। খালি পায়ে প্রতিমা বিসর্জন। বিজয়ার পর গুরুজনদের পায়ে হাত দিয়ে নারকোল নাড়ু খাওয়া। সেই সাথে আবার পরের বছরের জন্য অপেক্ষা।
অপেক্ষাতেই পুজোর আনন্দ
কৃষ্ণ রায়
শরৎ এলেই পুজোর সুবাস ভেসে আসে আকাশে বাতাসে। চারপাশে। মনটা ফুরফুরে মনে হয়। নিজেকে স্বাধীন মনে হয়। সারা বছর ধরে চলে আসা একঘেয়েমি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আর এমন একটা আবেশ ঘিরে ধরে যা বলে বোঝানো যাবে না।
তিস্তার পাড়ে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে চলে যাই। তিস্তার পাড় জুড়ে শুধু কাশ বন। আর কাশ বন। সাদা কাশে দিগন্ত ছেয়ে যায়। একবুক শ্বাস নিই টেনে। নিজেকে পুরোপুরি সুখী হয়। মনে হয় নির্মল।
পুজোর চাইতেও পুজোর জন্য অপেক্ষা আমার দারুণ লাগে বরাবর। ছোটবেলায় তো বটেই। এমনকি এখনও সেই অপেক্ষা মনের মঝে একটা পুলক জমায়। কেননা প্রতিবার উমা মাকে বিদায় দিতে গিয়ে মন খারাপ হয়ে যায়। কিন্তু এই যে সত্তর দিন পঁয়ষট্টি দিন করে করে অপেক্ষা গুলো করি এতেই আনন্দ গুলো থেকে যায়। আগে মনে হত কবে যে পুজোটা আসবে। কামনা করতাম জলদি আয় জলদি আয়। কিন্তু এখন তা করি না।
পুজোর সময় দেখেছি আমার পুজোর কাপড় আসত পুজোর ঠিক দুদিন আগে। আর বাবার আনা সেই এক সেট জামাই আমার পুজোর সেরা উপহার হত। সেই আনন্দ এখনকার অনেক জামার সেটেও পাই না।
পুজো যখন আসে তার আগে আসে মহালয়া। আর সেই মহালয়া আমার কাছে একটা বাজির উৎসব মনে হয়। আমরা চকলেট, লংকা, চরকি তুবড়ি আরও অনেক আলোবাজি ফাটাতাম। পুজোর যে আবেশটা আজও ভালো লাগে সেটা হল, ভোররাতে মায়ের ডেকে দেওয়াতে। ঘুম ঘুম চোখে বেরিয়ে পড়ি বাড়ির বাইরে। পাড়ার ছেলেরা মিলে বোম ফাটাই। আর ওপাড়ার থেকে অনবরত বাজির আওয়াজ আসতেই থাকে।
আর ঠিক সকালে টিভির পর্দায়, 'মহিষাসুরমর্দিনী'র অনুষ্ঠান।
তারপর আর কিছু দিন অপেক্ষা পুজোর প্যান্ডেলে ঘুরতে যাওয়ার। আমার কাছে পুজোর জন্য অপেক্ষা তাতেই বেশিরভাগ আনন্দ উপভোগ করে থাকি।
যা হোক, এবার পুজোতেও সাবধানতা মেনে আমাদের চলতে হবে। এই সতর্কতা মানতে হবে নিজের জন্যে, নিজেদের জন্যে। পুজোর আগাম শুভেচ্ছা রইল। সকলে ভালো থাকুন,সুস্থ থাকুন। ধন্যবাদ।
শরত কাননে
পলাশ দাস।
বর্ষাকাল আর জন যন্ত্রণা যদি সমার্থক হয়, তাহলে তার মধ্যে ডুবে থাকা আমার ছোটবেলার প্রকৃতির এক নিয়মিত অভ্যাস ছিল বলেই মনে হয়। প্রায় তিন মাস এইরকম দশা চলত, তারপর মুক্তি মিলত শরত আসলে। সেই সময় আমাদের একপ্রকার ডুবে থাকার বাধ্য অভ্যাস ছিল। কিন্তু, এরই মধ্যে ধানক্ষেতের বুক সমান জলে যখন শাপলা ফুটে উঠত, ধানের মাথা নুয়ে পড়ত জলের খুব কাছে, তখন বিপরীত ছবিটিও ফুটে উঠতে সময় লাগত না। এই সময় যে রথের সময়, আর তখন থেকেই যে পুজোর সাজ শুরু। হ্যাঁ, ডুবে থাকতে থাকতেও কাশ ফোঁটার সে আনন্দে উদ্বেল হওয়া এক অন্য অভিজ্ঞতার কাছে নিবিড়ভাবে দাঁড়িয়ে পড়া।
আমার পুজো, বিশেষ করে ছোটবেলার এমনই কিছু টুকরো ছবি আছে। আমাদের বারাসাতে এখনকার মত আমাদের এ দিকটাই তখন বসতি ছিল না।তাই, বাড়ি থেকে বেশ খানিক দূরে পুজোয় যেতে হত। তবে সেখানের সাথে ওতপ্রোত একটা যোগ ছিল, যে বাবার সূত্রেই। কিছুটা আমারও তা বলা যেতে পারে। পুজো আসার বেশ কিছু দিন আগে থেকেই স্কুল ছুটি করার এক অদ্ভুত নেশা চেপে বসত। পুজোর আনন্দটা পুরো চেটেপুটে নেওয়ার অদম্য এই ইচ্ছার কাছে বার বার হার মেনে যেত বাড়ির বড়রা। মাঝে মধ্যে সেখানেই প্রতিমা তৈরি করার প্রস্তুতি চলত।আর সে ছিল আমার বাড়তি পাওয়া। খড় বাধা, মাটি লেপা, আর তার সবটাই যেন দেখতে হবে।বহুবার দাঁড়িয়ে থেকে দেখতাম সেই অনন্য দৃশ্য। তবে বেশির ভাগ সময় পুজোর কয়েকদিন আগে প্রতিমা নিয়ে আসা হত, আর তারপর থেকে প্রতিমার সবকিছু খুঁটিয়ে দেখা ছিল যেন প্রতিমা শিল্পীর পরীক্ষা নেওয়ার মত। মাথায় থাকত না, তারপরই আমার পরীক্ষা। এরপর পুজোর প্রত্যেকটি দিন কাটত মহা হুল্লোড়ে,সাথে সাথেই হিসাব হত কটা দিন বাকি থাকল। তখনই দুঃখ জমে বসতে থাকত মনে।
এই পুজোর সময়টা আরও উপভোগ্য হয়ে উঠত আমাদের বাড়ির সবাই বাড়িতে আসত বলে। দাদা, দিদি, ভাই, বোনরা সব এক জায়গায়, সে অন্য এক হুল্লোড়। সারা বছর এই দিনগুলোর জন্য অপেক্ষা থাকত বিস্তর,আর এই চুটিয়ে আনন্দ করার জন্য পুজো যত এগিয়ে আসত উৎসাহ, ততই বেড়ে যেত। সারা বছরের না দেখা মুখগুলো এই কয়েকটা দিন দেখে নেওয়া, তাদের সাথে আড্ডা জমানো। তখন তো আর ফোন ছিল না এখনকার মত, দেখা না হলে কথা হবে।ইচ্ছে হলেই যোগাযোগ করা যাবে। চিঠি চালাচালি হত তবে তা খুবই সামান্য, সামনাসামনি দেখা আড্ডা দেওয়ার বিকল্প হয়ে উঠতে পারত না। তাই অপেক্ষার প্রহর।আর এই মিলনের দিন গুলিতে সারা বছরের না পাওয়াকে আমরা পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতাম।
মনে আছে প্রত্যেকবার আমরা বিসর্জন দেখতে যেতাম, আমাদের প্রতিমাকে নিয়ে চলতাম বিসর্জনে। বহু মানুষের সে এক হার্দিক সমারোহ। এই কদিন দূরত্ব মেটানোর যে খেলা চলত, তার শেষ দিন বলে আরও বেশি করে তা উৎযাপন করার ঢল নামত। এমনই এক বিজয়ার দিনে দুপুর থেকে তুমুল বৃষ্টি, জল জমছে আমাদের এই খণ্ড গ্রামে। তখন শহর হয়ে ওঠে নি এখনকার মত। প্রবল বৃষ্টির সেই তোড়ে সেবার জলে ভরে উঠল চারিপাশ। যাওয়া হল না প্রতিমা নিয়ে বিসর্জনে। সেবার কথা মনে পড়লে এখনও মন টন টন করে। খুব আশা ছিল বছরে একটা দিন ঠিক বৃষ্টি কমে যাবে আর আমাদের যাওয়া হবে। এমন এক বার নয়, বেশ কয়েক বছর হয়েছে, তবে সেই বছরটা বেশি করে মনে পড়ে। সে বারের মত বৃষ্টি আর জল জমতে অন্তত পুজোর দিনে মনে পড়ে না।
আসি এখনকার কথায়, যত বুঝতে শিখলাম, তত আনন্দ কমতে শুরু করল। নানা ঝামেলায় আর ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাওয়ায় এখনকার পুজোয় আগের মত ততটা আনন্দ আর খুঁজে পাওয়া যায় না। এক জনের সময় হলে আরেকজন ব্যস্ত, আরেক জনের হলে তো অন্য জন, এই ভাবে চলতেই থাকে। মনে হয় সেই বাঁধনছাড়া দিন গুলোয় যদি ফিরে যাওয়া যেত। যেখানে কোনো বাধ্যবাধকতা ছিল না কোনোকিছুর। তাহলে, বেশ হত। তবুও সময়ের সাথে সাথে সব বদলে নিতে হয়, মানিয়ে নিতে হয়। তখনকার আনন্দ এক রকম, এখনকার অন্যরকম। পার্থক্য শুধু খুঁজে নেওয়ায়। আনন্দ এখন যে হয় না তা নয়, শুধু খুঁজে নেওয়া...
এই পরিবর্তনের নামি তো জীবন, সেদিনের মত যদি আজ একইরকম থাকত, তাহলে সেও হয়তো আর উপভোগ্য থাকত না। সেদিনের সেই মজা,আনন্দ,দিন যাপন,হুল্লোড় গুলোকে বুকে নিয়ে নিরন্তর এগিয়ে যাওয়া,আর তার থেকে রসদ খুঁজে নেওয়া। তাকে আগামীর মধ্যে, অনেকের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়াই এখনকার পুজো, আমার পুজো...
আমার পুজো
শক্তিপদ পণ্ডিত
ছটফট করে দিন কেটে যায়
এলো ষষ্ঠীর ভোর,
মন প্রাণ জুড়ে লেগে আছে
দুগ্গা পুজোর ঘোর।
সপ্তমীতে যাব ঠাকুর দেখতে
পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে,
করোনার জেরে হবেনা যাওয়া
কালীঘাট ভবানীপুরে।
অষ্টমীর সকালে অঞ্জলি দেব
বাবা মায়ের সাথে,
বেলপাতা আর ফুলের কুঁচি
মুঠোয় ভরে হাতে।
নবমীতে স্পেশাল রান্না খাব
আমরা দু'ভাইবোন,
দশমীর দিন দুর্গাপুজো শেষ
হবে মায়ের বিসর্জন।
মনে পড়ে সেই দিনগুলো!
প্রীতি রায়...
যখন আমার আশপাশ জুড়ে শুধুই তোর সুবাস,
মনে পড়ে,বসন্তের দোলাচলে রঙেবেরঙের
আবীরের উষ্ণ ছোঁয়া,
হলদে শাড়ির ভাঁজে রক্তিম আবীরের স্পর্শ,
চুলের মাঝে সাদা ফুলের সুগন্ধ,
আমার শরীরের আবীর তোর শরীর ছুঁয়ে যাওয়া
মনে পড়ে?
মনে পড়ে! সেই শিউলি গাছ ;
যেটা প্রতি বছর শরতের শুভ্র মেখে
ফুলে ফুলে ভরে যেত,
আর তুই ফুলের কাকন, মালা গেঁথে
আদরে পরিয়ে দিতিস, তাকিয়ে থাকতিস একপলকে।
নদীর ধারে কাশবনের মাঝে জলের খেলা দেখা,
মনে পড়ে!
মহালয়ায় কাকভোরে উঠে রেডিওর আমেজে
ছাদের কার্নিশে আলতো হাতের উষ্ণতা মাখা,
মনে পড়ে?
তোর কাছে এগুলো মূল্যহীন হলেও,
এগুলো আমার কাছে আজও ভীষণ যত্নে রাখা ।।
শুভ্র বিশ্বাস
যদি, তুলে রাখা যত্নের নুড়ি,
অভিমানে ছুঁড়ে দাও জলে,
জানবে, জলের ঢেউ আজও,
এখনও নিয়ম করে যারা,
পাতাঝরা শব্দের ডাকে,
ভেজা ঘাসে আলসেমি হয়ে,
শেষ বিকেলের রোদ মাখে।
কেউ একমনে, রেলগাড়ি দেখে,
আর দেখে ধোঁয়া ছেড়ে যাওয়া,
কেন কাশের বনের ধার ঘেঁসে,
ভুল করে খেলে যায় হাওয়া,
যে ছেলেটি রোজ খেলা করে,
খালি গায়ে, ধুলো পায়ে ঘুরে,
কখনও সঙ্গে নিও তাকে,
নীল রঙের স্বপ্ন
রেজাউল করিম রোমেল
আমার আকাশ স্বপ্ন দ্যাখে,
নীল রঙের স্বপ্ন।
এ আকাশ কবিতা লেখে,
গান শোনে, সুর তোলে,
কষ্টে ভরা সুর।
আকাশের রঙ বড় ফ্যাকাসে।
কালো মেঘের তীক্ষ্ণ চিৎকার ...
খণ্ড-বিখণ্ড করে তাকে।
হতাশার চাদর,
তার অস্তিত্বকে বিলীন করতে চায়।
তবুও স্বপ্ন দ্যাখে,
নীল রঙের স্বপ্ন...
গল্প
তৃণা
দেবব্রত ঘোষ মলয়
আমার ঘর। যেমন গরিবদের হয়।পলেস্তারা খসা দেওয়াল, দরজা জানালার পর্দা রংচটা তবে পরিষ্কার, আর মেঝে সাফসুতরো কিন্তু চটাওঠা। কিছু আসবাব আছে, যেমন শিক্ষিতদের হয়,আর শিক্ষিতরা গরীব হলে আর কিছু না থাক, বই কিছু থাকে, আমারও আছে। বুকসেলফ নেই, তাই দেওয়ালে তক্তা লাগানো তাক ভর্তি অসংখ্য বই - অর্থাৎ রুচিশীলতা আর গরিবির মেলবন্ধনে মিথ্যা অহংকার। এটা প্রথম চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় তৃণা, আর সঙ্গে সঙ্গে এও বোঝে এ আকাটের দেখা চোখই নেই। সুতরাং এক কথায় তৃণার অস্তিত্বটা তখনই হওয়া উচিত ছিল আমার থেকে বিযুক্ত, কিন্তু কি করে যে হল না - তাহলে প্রথম থেকেই বলি।
সেই দিনটা নিম্নচাপের ঝিম-ধরা আর একঘেয়ে বৃষ্টিতে ভিজে একসা। আমার এক চিলতে বাসায় এমনিতেই রোদ আসে না তাই স্যাতসেতে বিছানায় পড়েছিলাম বেলা এগারোটাতেও। হঠাৎ ভাঙ্গা দরজায় কড়া নাড়ার শব্দে একটু বিস্মিত হলাম, সঙ্গে বিপন্নও, এই অভাগাকে আবার কেউ খোঁজে নাকি। শুধু শুধু কষ্ট করে দরজা খুলে জানাতে হবে যাকে খোঁজা হচ্ছে এ সে নয়। কিন্তু সেরকম হল না।
দরজা খুলতেই একরাশ বিরক্তি আর আগুন চোখে খরখরে মেয়েটি ঝাঁজিয়ে ওঠে - মানুষ নাকি আপনি? এই দুপুরে তো কেউ ঘুমায় না, খুলতে পারছেন না দরজাটা? দুহাতে দু পাল্লা ধরা আমাকে প্রায় ঠেলে সরিয়ে সেই ভিজে চুপচুপে তরুণী সটান ঢুকে আসে আমার এক চিলতে ঘরে।দরজা ভেজিয়ে দিই আমি, কারণ বাইরের বৃষ্টি ভিজিয়ে দিচ্ছে ঘরের ভেতরটা।
প্রিয় পাঠক, এই পর্যন্ত পড়ে নিশ্চয়ই উত্তেজিত হচ্ছেন, শিহরণ জাগছে মনে। এবার কিছু একটা হবে, একলা ঘর, বাইরে বৃষ্টি, সপসপে তরুণী, আর মৃদু হেসে ভাবছেন এইসব নিম্নস্তরের লেখকরা কেন যে এসব লেখে। না, সুধী পাঠক, আপনার অবদমিত নিষিদ্ধতার কিছুই হলো না বরং যা হলো সেটাকে আকস্মিক বজ্রপাত ছাড়া আর কিই বা বলা যায়! ফিরে আসি গল্পে।
হাতের ছোট্ট ছাতাটা দরজার এক কোণে রেখে তরুণীটি এগিয়ে আসে আমার একদম কাছে আর সপাটে আমার হতচকিত গালে একটা চড় মেরে বলে - আমার নাম তৃণা। মনে রাখবেন নামটা। কাল যদি ফের ওই ঘটনা ঘটে বটতলা মাচার সব কটাকে একসঙ্গে হাজতে পোরার ব্যবস্থা করব। ইভটিজিং এর শাস্তি হাতে হাতেই পাবেন আপনারা। আমি পুলিশে চাকরি করি।
চড়টা খাবার পর মাথাটা প্রথমে অসহ্য রাগে দপদপ করছিল, তারপর চারদিকটা ধোঁয়াশায় ভরে গেল, বোধহয় গাল এখনো বুঝতে শেখেনি ছোটবেলার আর বড়বেলার তফাতটা, তাই তার জ্বলুনি একরকম থেকে চোখ ভিজিয়ে দিয়েছিল। এবার সম্বিত ফিরে পেয়ে অত্যন্ত কড়া ভাবেই বলি - পুলিশের চাকরি করেন না পাগলা গারদ থেকে ছাড়া পেয়েছেন? টিজ করা তো দূর অস্ত আপনাকে দেখলাম তো আজই প্রথম, জীবনে এত ইতর ছোটলোক মেয়ে দেখিনি আমি।
টিনার না, হঠাৎ মুখটা কেমন থমথমে হয়ে গেল। বড় বড় চোখে দেখতে থাকলো আমাকে আর ঐ দু চোখে জল গড়িয়ে পড়ল। এই সামান্য কয়েক মুহূর্তে আমি একটাই কথা মনে মনে বললাম - আরে কি সুন্দর নিষ্পাপ দেখতে। ভবিষ্যতে অনেকবার থমথমে মুখের ভিজে চোখের তৃণাকে দেখে ঐ একই কথা মনে হয়েছে আমার। মুহূর্তে ভুলে গেছি ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো, তৃণার অন্যায়গুলো, আমি বিমোহিত হয়েছি ওই নিষ্পাপ সুন্দরীতে। দেখুন পাঠক আবার খেই হারিয়ে ফেলে ভবিষ্যতে চলে যাচ্ছি। না না দুঃখিত, ফিরে আসছি গল্পে।
ভেজা চোখে তৃণা ধরা গলায় বলে, কিন্তু যারা সেদিন ছিল তাদের মধ্যে একজন তো হুবহু আপনার মতই দেখতে। আমি আপনাকে এ ঘর থেকে বের হতে দেখেছি গতকাল, আর তখনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম একটা হেস্তনেস্ত করবার। তাই আজ সোজা এখানে এসে ... ছি ছি কি লজ্জার কথা। এত বড় ভুলটা আমি করে ফেললাম যার কোনো ক্ষমা হয় না।
এতক্ষণে আমি ভালো করে দেখি তৃণাকে। গায়ের রং চাপা, মুখশ্রী খুব মিষ্টি আর চোখগুলো বড় বড়। পরনে জিন্স আর টপ, চুল ছোট করে ছাঁটা। হেসে বলি - যাকগে, ভুল তো সবারই হয়, আমি কিছু মনে করলাম না। কিন্তু, এই কাক ভেজা অবস্থায় আপনাকে যে এক কাপ চা অফার করব, সে উপায়ও নেই। দুধ ফুরিয়ে গেছে।
তৃণার ভেজা মুখ হাসিতে ঝলমলিয়ে উঠলো, যেন মেঘ কেটে রোদ দেখা দিল। বলল - কিন্তু এখন আমার চা চাই। সরুন তো, আমি বানাচ্ছি। দুধ ছাড়া কড়া চা।
নিতান্ত মেয়েলি সাবলীলতায় আমার এক চিলতে ঘরের কোণে ছোট্ট টেবিলের ওপর বসানো জনতা জেলে অল্প সময় বাদেই দু'কাপ চা নিয়ে আমার মুখোমুখি বসলো তৃণা। আর এখান থেকেই বিধাতার অমোঘ ইশারায় ধীরে ধীরে তৃণা আমার বন্ধু হয়ে গেল। সেদিনকার পর তৃণা রোজই সকালে কাজে যাওয়ার সময় আমার ঘরে কড়া নাড়ে এবং সটান এসে দু'কাপ চা করে নিয়ে বসে যায়। মিনিট দশেক থাকে তৃণা। প্রতিদিন ওই দশ মিনিটের অনর্গল কথায় তৃণা আমাকে তার সম্বন্ধে অনেক কিছুই জানায়। সে আর তার বিধবা মা আমাদের পাশের পাড়ার ছোট্ট গলিতে একটি বাসা বাড়িতে থাকে। বাবা পুলিশে কাজ করতেন, অত্যন্ত সৎ মানুষ ছিলেন। কথায় কথায় বলতেন - সোজা পথে চলিস মা, কাউকে ভয় পাবি না। বছর তিনেক আগে এক দুর্ঘটনায় বাবা মারা যান। সেদিন থেকেই বাড়িতে তৃণার আর ওর মা। বাবার চাকরির সুবাদে তৃণা পুলিশে চাকরি পায়। যদিও কাজটা অফিসে বসে। যখন আমার স্নাতকোত্তর শংসাপত্র তৃণা দেখতে পায়, তখন থেকেই ওর ধ্যান জ্ঞান হয়ে ওঠে আমাকে উৎসাহিত করা কোন ভাল চাকরির জন্য। যত বলি পৃথিবীতে সবাই চাকরির জন্য জন্মায় না তৃণা, ততই ও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে আর বিভিন্ন সরকারি চাকরির ফরম কিনে এনে নিজের হাতে ভরে দেয়।
এভাবে বছরখানেক কেটে যায়। আমি একটাও চাকরির আবেদনপত্র ডাকে পাঠাই না। কিন্তু আমাদের বন্ধুত্ব ক্রমেই প্রকৃতির অমোঘ নিয়মে ঘনিষ্ঠতার দিকে এগোয়। ব্যর্থ পুরুষরাও তো আদতে পুরুষই, তাই একদিন তৃণাকে হঠাৎই চায়ের কাপ সরিয়ে জড়িয়ে ধরি। তৃণা এই অকস্মাৎ ঘটনায় হতচকিত হয়ে যায় আর অবাক দু চোখে বড় বড় করে তাকায় আমার মুখের পানে। কি হয়ে যায় আমার মধ্যে, দুই হাতে ওর মুখটি তুলে ধরে এক গভীর চুমুতে ঠোঁট চেপে ধরি ওর ঠোঁটে। কতোক্ষন চলেছিল এ চুম্বন জানি না কিন্তু এটা জানি সেদিন থেকেই তৃণা আর বন্ধু রইলো না নিছক, হয়ে উঠলো আমারই অপর অর্ধেক। এরপর আমরা প্রায়ই পরস্পরকে আদর করি, চরম আশ্লেষে রত হই চুম্বনে, কিন্তু সবই ঘটে ওই সকালের চায়ের দশ মিনিটের মধ্যেই। অতএব পাঠক, আপনাকে নিতান্তই নিরাশ করে বলতে হচ্ছে শারীরিক সম্পর্কে আমরা কোনদিনই সম্পূর্ণ সাবালক হতে পারিনি অর্থাৎ যা কিছু হয়েছে ওই চুমু আর আলতো আদরের মাধ্যমেই। এভাবেই চলতে চলতে কেটে গেল প্রায় পাঁচ বছর।
(পরের অংশ আগামী সপ্তাহে।)
ইলশেগুঁড়ি-র সাপ্তাহিক অনলাইন পত্রিকা
ই-পত্রিকায় লেখা পাঠাবার নিয়মাবলী
- সাহিত্য সংস্কৃতি বিষয়ক অপ্রকাশিত মৌলিক লেখা পাঠাতে পারেন।
- কোন লেখার ক্ষেত্রে শব্দসংখ্যার বাঁধন নেই তবে মহাভারত পাঠাবেন না।
- লেখা শুধুমাত্র বাংলা ইউনিকোড ফন্টে টাইপ করে পাঠাতে হবে।
- নিজের একটা ছবি দেবেন অ্যাটাচ ফাইল হিসাবে।
- ঠিকানা ও যোগাযোগের নম্বর থাকা জরুরি।
- বইয়ের আলোচনা পাঠানো যাবে তবে সঙ্গে দিতে হবে বইটির প্রচ্ছদের ছবি।
- প্রত্যেকের লেখার আলাদা করে প্রাপ্তি স্বীকার করা হয় না।
- লেখা যে কোন সংখ্যায় প্রকাশিত হতে পারে।
- আমাদের ফেসবুক পেজে বা ওয়েবসাইটে প্রতি সপ্তাহে সম্পূর্ণ সূচিপত্র দেওয়া হবে।
- প্রত্যেককে তাঁর নিজের লেখার লিংক আলাদা আলাদা ভাবে পাঠানো সম্ভব হয় না।
- পত্রিকা প্রকাশের অব্যবহিত পরেই প্রত্যেক লেখককে পত্রিকার লিঙ্ক পাঠানো হয়।
প্রয়োজনে ৯৩৩১২৭১৮২৫ নম্বরে হোয়াটসঅ্যাপ করুন বাই-মেইল করুন ilseguripatrika@gmail.comআমাদের ওয়েবসাইট অনুসরণ করুন:- https://ilseguripatrika. blogspot.com/আমাদের ফেসবুক পেজ :- https:://www.facebook.com//ilseguripatrikaইলশেগুঁড়ি থেকে প্রথম কবিতা সঙ্কলন সাজির সাফল্যের মুকুটে আরো একটি পালক যুক্ত করল আনন্দবাজার পত্রিকার এই রিভিউ
- সাহিত্য সংস্কৃতি বিষয়ক অপ্রকাশিত মৌলিক লেখা পাঠাতে পারেন।
- কোন লেখার ক্ষেত্রে শব্দসংখ্যার বাঁধন নেই তবে মহাভারত পাঠাবেন না।
- লেখা শুধুমাত্র বাংলা ইউনিকোড ফন্টে টাইপ করে পাঠাতে হবে।
- নিজের একটা ছবি দেবেন অ্যাটাচ ফাইল হিসাবে।
- ঠিকানা ও যোগাযোগের নম্বর থাকা জরুরি।
- বইয়ের আলোচনা পাঠানো যাবে তবে সঙ্গে দিতে হবে বইটির প্রচ্ছদের ছবি।
- প্রত্যেকের লেখার আলাদা করে প্রাপ্তি স্বীকার করা হয় না।
- লেখা যে কোন সংখ্যায় প্রকাশিত হতে পারে।
- আমাদের ফেসবুক পেজে বা ওয়েবসাইটে প্রতি সপ্তাহে সম্পূর্ণ সূচিপত্র দেওয়া হবে।
- প্রত্যেককে তাঁর নিজের লেখার লিংক আলাদা আলাদা ভাবে পাঠানো সম্ভব হয় না।
- পত্রিকা প্রকাশের অব্যবহিত পরেই প্রত্যেক লেখককে পত্রিকার লিঙ্ক পাঠানো হয়।
প্রয়োজনে ৯৩৩১২৭১৮২৫ নম্বরে হোয়াটসঅ্যাপ করুন বা
ই-মেইল করুন ilseguripatrika@gmail.com
আমাদের ওয়েবসাইট অনুসরণ করুন:- https://ilseguripatrika. blogspot.com/
আমাদের ফেসবুক পেজ :- https:://www.facebook.com//ilseguripatrika
ইলশেগুঁড়ি থেকে প্রথম কবিতা সঙ্কলন সাজির সাফল্যের মুকুটে
আরো একটি পালক যুক্ত করল আনন্দবাজার পত্রিকার এই রিভিউ
ইলশেগুঁড়ি প্রকাশনের প্রথম কবিতা
সংকলন সাজি এখন পাওয়া যাচ্ছে।
প্রকাশের পথে গোয়েন্দা উপন্যাস
ইলশেগুঁড়ি-র একরাশ শুভেচ্ছা বসিরহাট থেকে প্রকাশিত
বিবস্বান পত্রিকার ২৫ বছরে পদার্পনে।
প্রকাশ আসন্ন
No comments